Header Ads

W3Schools.com

নিজেদের লাভে ডাক্তাররা ৫০ ভাগ অপ্রয়োজনীয় ঔষধ দেন রোগীদের। জানুন বিস্তারিত




বাংলাদেশের অধিকাংশ ডাক্তার বা চিকিৎসকরা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে রোগীর চিকিৎসা পত্রে বা প্রেসক্রিপ্সনে অনেক অপ্রয়োজনীয় ঔষধ লিখে থাকেন। এক গবেষনায় দেখা গিয়েছে দেশের প্রায় ৫০ ভাগ ঔষধ্ই অপ্রয়োজনে প্রয়্গে করা হয়।  যেগুলো রোগীকে পরবর্তিতে বিভিন্নভাবে ক্ষতির দিকে নিয়ে যায় এবং অসু্স্থ হয়ে পড়ে। 

ডক্টর ফর হেল্থ এন্ড এনভায়রনমেন্ট, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন দি ইউনিয়নের যৌথ উদ্যেগে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ডা. এইচ.এম লেলিন চৌধুরী নিজেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বৃতি দিয়ে এরকম মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশে আক্রান্ত মোট রোগীর ৬০ ভাগ অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত এবং ৪ ভাগ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। মানুষ শুধু লাভের পিছনে ছুটতে গিয়ে আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশকে ধ্বংস করছে। যার ফলে মানুষ নানান ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। তাছাড়াও ডাক্তাররা যেসব ঔষধ লিখে, তার ৫০ ভাগই অপ্রয়োজনীয়।
তিনি বলেন দেরে রোগীদরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে কোন প্রকার নিয়ম কানুন নির্দেশনা অনুসরন করা হচ্ছেনা। সকল ঔষধরেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়াবহ হতে পারে। উন্নত বিশ্বে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মানুষের মৃত্যুর হার চতুর্থ স্থান অধিকার করে আছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রন দরকার।
ডা. মো: আবু সাইদ বলেন, “অসংক্রামক রোগ এখন সভ্যতার অভিশাপ। সভ্যতার নামে পরিবেশ দূষিত, খাবার দূষিত করা সহ উন্নয়নের ভূল পথ মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।  আমরা আমাদের প্রয়োজন ছাড়াই বিদেশিদের অনুকরন করছি।  এটা রোধ করা দরকার। আমাদের দেশে পশ্চাত্যের অনুকরনে অ্যান্টিবায়োটিক হ্যান্ডওয়াশে য হাত ধুয়া কর্মসূচী চালু হয়েছে তা আমাদের আগামী প্রজন্মকে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে ফেলবে। পৃথিবীব্যাপী যখন এরকম স্বাস্থ্যহানিকর পন্যের বর্জনে ডাকে এসেছে। তখন কোম্পানিগুলোর প্ররোচনায় আমরা বিভ্রান্তকর তথ্য প্রদান করে মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার নামে অ্যান্টিবায়োটিক হ্যান্ডওয়াসে হাত ধুয়ার প্রচারনা করছি। ”
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শুভাগত চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অসংক্রামক রোগ প্রসারে পরিবেশ দূষণ, জীবন আচরণ ও খাদ্যাভাস দায়ী। মাত্রাতিরিক্ত ভাত খাবার অভ্যাস ডায়াবেটিস রোগের প্রভাব বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে শাক সবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে।’
বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, ‘সরকার অসংক্রামক রোগের বিস্তারে চিন্তিত। তাই অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু যথাযথ সিদ্ধান্তের অভাবে সরকারের অসংক্রামক রোগের বিস্তার কমানো সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য বাজেটে রোগ প্রতিরোধকে না প্রাধান্য দিয়ে ক্রয় আর অবকাঠামো তৈরিতে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। আর এই খাতগুলো দুর্নীতির ক্ষেত্র। সরকারের উচিত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় বেশি জোর দেয়া।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আমির হোসেন বলেন, জনসচেনতার ফলে দেশে এখন তামাক ব্যবহারে মানুষ সর্তক হচ্ছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো বসে নেই। তারা এখন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলকে বেছে নিয়েছে।’
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ‘তামাক কোম্পানিগুলো দেশে অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়ছে। তারা দেশের মাইলের পর মাইল বনভূমি ধ্বংস করে পাবর্ত্য এলাকায় তামাক চাষ করছে। শিশু-কিশোরদের ধূমপানে উৎসাহ প্রদান করছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে অবহেলা করে তারা নানাভাবে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। জনস্বার্থে ক্ষতিকর ও রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল এই তামাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানাভাবে পুরস্কার প্রদান করছে। জনস্বার্থ রক্ষায় অবশ্যই তাদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।’
অধ্যাপক ডা. রেজওয়ানুল হক বুলবুল বলেন, ‘বাংলাদেশে ৫৯ শতাংশ মানুষ হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ডায়বেটিস, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে মারা যায়। অসংক্রামক রোগের প্রধান কারণ নেতিবাচক জীবনাচার, যেমন- তামাক ও বিভিন্ন ক্ষতিকর নেশা, ফাস্ট ফুড-জাংক ফুড ও কোমল পানীয়-মোড়কজাত কেমিক্যাল জুসের আধিক্য, অলসতা ও শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি, মুটিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এসব ভয়াবহ রোগ প্রতিরোধ করতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। এক্ষেত্রে হেলথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
ডিএইচইএন’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুন নাহারের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজওয়ানুল হক বুলবুল। আলোচনা করেন ডিএইচএনের সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.